এম. বেদারুল আলম ,দৈনিক কক্সবাজার::
এক সময়ের দুর্দান্ত প্রতাপশালী বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কক্সবাজার জেলা শাখার কার্যক্রম অনেকটা কাগজে কলমে। মওসুমি কিছু কর্মসূচির মাঝে মাঝে প্রেস বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ে। বিএনপির সিনিয়র জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে ও জেলা জামায়াতের বিরোধ আগে অগোচরে হলেও সম্প্রতি তা প্রকাশ্যে চোখে পড়ার মতো। বিরোধ আরো তীব্র হওয়ার আশংকা রয়েছে আগামি নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে। ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তির আন্দোলনে হাশেমিয়া মাদ্রাসায় সংগঠিত জ¦ালাও পোড়াও এর ঘটনায় পুলিশের মামলার পর থেকে জেলায় জামায়াত অনেকটা আড়ালে চলে যায়। সেই থেকে জামাতের কার্যক্রম অনেকটা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের মত। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামী ছাত্র শিবিরের জোরালো কার্যক্রম এখন আর তেমন নাই বললেই চলে। কক্সবাজার সরকারি কলেজে এক সময় যে শিবিরের জন্য বড় করে কথা বলতে পারতো না অন্যান্য দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে শিবির নিজেরাই সেখানে অনেকটা নিজভূমে পরবাসির মত। ফলে জেলায় জামায়াতের কার্যক্রম অনেকটা কুনো ব্যাঙের শীতনিদ্রার মত। তবে জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের কার্যক্রম আরো গতিশিল এবং আগামি নির্বাচনে তাদের শক্ত ভাবে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুতি ও সারছেন বলে দাবি করছেন।
জামায়াতের নেতাকর্মী এবং জেলার শিবিরের সাবেক অনেক নেতাদের সাথে আলাপ করে মাঠে প্রস্তুতি – কার্যক্রম সর্ম্পকে বিভিন্ন গুরুত্বর্পূণ তথ্য পাওয়া গেছে। জামায়াত ইসলামী কক্সবাজার সদর উপজেলা শাখার আমীর মোলানা খোরশেদ আলম আনচারি বলেন, আমাদের উপর যে ঝড় চলছে তা মনে হয় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে হয়নি। তারপরে ও জামায়াত নির্ভয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা আমরা পালন করছি। কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহন করছেন নেতারা। তিনি বলেন সদরে আমাদের ৩টি কমিটি সক্রিয়। শহর জামায়াত, ঈদগাও সাংগঠনিক উপজেলা জামায়াত, সদর উপজেলা জামায়াত। এয়াড়াও আমাদের ্প্রশাসনিক ৮টি উপজেলা, এবং সাংগঠনিক উপজেলা কমিটি জেলায় সক্রিয় রয়েছে। কমিটি থাকলেও কার্যক্রম অনুপস্থিতকেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে জেলায় জামাতের বিরুদ্ধে ৩শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে যেখানে এক হাজারের বেশি নেতাকর্মী আসামী রয়েছে। তাহলে আমরা আন্দোলন কিভাবে করব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি পদবীধারী একনেতা বলেন, আমরা এখন নিষিদ্ধ সংগঠনের মত , সরকারের হয়রানী এবং নির্যাতন থেকে বাচঁতে বেশিরভাগ শিবিরের নেতা এখন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বেশ পরিবর্তন করে রাজনৈতিক মাঠ পর্যবেক্ষন করছে। তিনি শিবিরের কার্যক্রম দূবর্ল বলতে নারাজ। কৌশলগত কারনে শিবির শান্ত রয়েছে বলে দাবি উক্ত নেতার।
অপরদিকে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম. রহিম উল্লাহ বর্তমান জামায়াতের কার্যক্রম এবং অবস্থান সম্পর্কে বলেন, জামায়াত মিছিল মিটিং না করলে ও কেন্দ্রিয় কর্মসূচি অনুযায়ি কার্যক্রম ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছে। জামায়াত কোন নিষিদ্ধ সংগঠন নয়, প্রতীক নিষিদ্ধ করা হয়েছে কিন্তু জামায়াত এখনো রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় । জামায়াত কক্সবাজারে অস্বিত্ব সংকটে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সেক্রেটারি বলেন, সময় আসলে বুঝা যাবে জামায়াত সক্রিয় নাকি নি¯ীŒয়। তবে জামায়াত আগামি নির্বাচনে জোটবদ্ধ নির্বাচন করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। যদি জোটবদ্ধ না হয়ে একক নির্বাচনে যায় তাহলে কক্সবাজারে জামায়াত ২টি আসনে প্রার্থী দেবে বলেও দৈনিক কক্সবাজারকে জানান এ নেতা।
জেলায় জামায়াত শীতনিদ্রায় তা বর্তমানে তাদের কার্যক্রমে প্রমানিত। কেননা গত ৪/৫ বছরে জামাতের কোন বড় ধরনের কার্যক্রম চোখে পড়েনি তবে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রয়ারি সাঈদী আন্দোলনে খানিক উত্তাপ ছড়াতে সক্ষম হয়। শীতকালে যেমন কুনো ব্যাঙ ৩ মাসের আহার সমেত গর্তে আশ্রয় গ্রহণ কওে তেমনি কক্সবাজারে জামায়াতের কার্যক্রম আপাতত দৃষ্টিতে সে রকম বলে রাজনৈতিক মাঠে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে কক্সবাজার—যেখানে সোনালি সৈকতের সৌন্দর্য দেশি-বিদেশি পর্যটকের চোখে স্বপ্ন বুনে দেয়, সেই একই ...
পাঠকের মতামত